কালিমায়ে তাওহিদের শর্তসমূহ:
আল্লাহ তাআলা কালিমাতুত তাওহিদ لا إله إلا الله কে ইসলামে প্রবেশের প্রতীক বানিয়েছেন এবং এটাকে বানিয়েছেন জান্নাতে প্রবেশের মূল্য বা বিনিময় এবং জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম।
কিন্তু এই কালিমা তার পাঠককে কোন উপকার করবে না যতক্ষণ না সে এর শর্তসমূহ আদায় করে। একবার হাসান বাসরি রাহি. কে প্রশ্ন করা হল, কিছু লোক যে বলে,
من قال لا إله إلا الله دخل الجنه
যে ব্যক্তি لا اله الا الله বলবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
প্রতিউত্তরে হাসান বাসরি রাহি. বলেছিলেন,
من قال لا إله إلا الله فأدى حقها وفرضها دخل الجنة
যে ব্যক্তি কালিমা পাঠ করল এবং তার হক ও ফরজ আদায় করল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [জামেউল উলূম ওয়াল হিকাম- ইবনে রজব হাম্বলী]
ইমাম বুখারী রহ. বলেন, ওয়াহাব ইবনু মুনাব্বিহকে প্রশ্ন কার হল,
أليس لاإله إلا الله مفتاح الجنة؟ قال: بلى، ولكن ليس مفتاح إلا له أسنان، فان جئت بمفتاح له أسنان فتح لك و إلا لم يفتح لك. وأسنان مفتاح الجنة هي شروط لاإله إلا الله
কি জান্নাতের চাবি নয়? তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তবে প্রতিটি চাবিরই কিছু দাঁত থাকে। সুতরাং তুমি যদি দাঁতবিশিষ্ট চাবি নিয়ে আসো তাহলে তোমার তালা খোলবে অন্যথায় তালা খোলবে না। আর জান্নাতের চাবির দাঁত হল لاإله الله এর শর্তসমূহ।
কালিমাতুত তাওহিদ-এর শর্তসমূহ সাতটি :
- ইলম তথা কালিমার না সূচক ও হ্যাঁ সূচক অর্থ ভালভাবে জানা।
- ইয়াকীন তথা কোন প্রকার সন্দেহ-সংশয় ছাড়া কালিমাকে বুকে লালন করা।
- ইখলাস তথা পরিপূর্ণ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে এই কালিমা গ্রহণ করা।
- সিদক তথা সত্যবাদিতা – এটা কিজব তথা মিথ্যার বিপরীত।
- মুহাব্বত তথা ভালবাসা। অর্থাৎ, এই কালেমার জন্যই কাউকে ভালবাসা, এর চাহিদা পূরণ করা এবং এ কালিমা পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করা।
- ইনকিয়াদ তথা আত্মসমর্পণ করা। একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য এই কালিমার প্রতিটি হকের সামনে নিজেকে সমর্পিত করা।
- কবুল। এটা রদ্দ তথা প্রত্যাখ্যানের বিপরীত অর্থবোধক শব্দ। কালিমার এ সকল শর্তসমূহের পক্ষে কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট প্রমাণাদি বিদ্যমান রয়েছে।