“আল্লাহর সিফাত ব্যাখ্যা মুক্ত” একথার অর্থ কি?
সালাফে সালিহিনগণ আল্লাহ তাআলার সিফাতের ক্ষেত্রে বলেন لا تُفسّر অর্থাৎ তার সিফাতের কোন ব্যাখ্যা করা হবে না। আসলে এই কথার অর্থ কি?
এই প্রশ্নটার মূল কারণ— একদিকে সালাফগণ বলছেন, আল্লাহর সিফাতের কোন ব্যাখ্যা করা হবে না। অপরদিকে আমরা তাদের থেকে আল্লাহ তাআলার অনেক সিফাতের ব্যাখ্যাও পাচ্ছি। বাহ্যিক এই ভিন্নতার কারণে উল্লেখিত প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক হচ্ছে।
এখানে আরো একটা কারণ রয়েছে। অনেক কালামিকে দেখা যায় তারা আল্লাহর সিফাতকে তাদের মনগড়া ব্যাখ্যার বৈধতার ক্ষেত্রে সালাফদের ব্যাখ্যাকে দলিল হিসেবে সাব্যস্ত করে বলে যে, তারা যখন আল্লাহর সিফাতের ব্যাখ্যা করেছেন তাহলে আমরা ব্যাখ্যা করলে সমস্যা কোথায়? তাদের এ জাতীয় উদ্ভট দাবির ক্ষেত্রেও উপরের প্রশ্নটা প্রাসঙ্গিক।
এ ব্যাপারে ইমাম সুফইয়ান ইবনু উইয়াইনাহ রাহি. (মৃত্যু- ১৯৮ হি.) বলেন,
كل شيء وصف الله به نفسه في القرآن فقراءته تفسيره ، لا كيف ولا مثل. (رواه ابن بطه في الإبانة (١٦٦/٣) ، والدارقطني في الصفات (ص ١٦٦) والصابوني في عقيدة السلف وأهل الحديث (ص ۶۸)، واللالكائي (٤٣١/٣) والبيهقي في الأسماء والصفات (ص ۳۹۷)، وفي الاعتقاد ص۱۲۳)
“প্রত্যেক এমন বিষয়ে যার দ্বারা আল্লাহ কুরআন তার সিফাত বর্ণনা করেছেন, তার কিরায়াত (পঠন)-ই তার তাফসির (ব্যাখ্যা)। তার কোন ধরন এবং সাদৃশ্য নেই।”
ইমাম যাহাবি রাহি. বলেন,
وكما قال سفيان وغيره : قراءتها تفسيرها : يعني أنها بينة واضحة في اللغة لا يبتغي بها مضائق التأويل والتحريف. (العلو ٢٥١)
“ইমাম সুফইয়ান রাহি. ও অন্যরা যে বলেছেন— (আল্লাহ তাআলার সিফাতের কোন ব্যাখ্যা করা হবে না) তার কিরায়াত (পঠন)-ই তার তাফসির (ব্যাখ্যা)— এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহর সিফাতসমূহ শাব্দিক অর্থের ক্ষেত্রে একেবারেই স্পষ্ট। কল্পিত ব্যাখ্যা ও বিকৃতির সংকীর্ণ গলিপথ খোঁজার প্রয়োজন হয় না।”
উল্লেখিত বক্তব্যের আলোকে— “আল্লাহর সিফাতের ব্যাখ্যা করা হবে না” সালাফদের এমন কথার উদ্দেশ্য এটাই স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহর সিফাতের বাহ্যিক অর্থ ছাড়া ভিন্ন কোন অর্থে বা রূপকার্থে ব্যাখ্যা করা যাবে না। আর আল্লাহ তাআলা সিফাতকে বাহ্যিক অর্থের আলোকে ব্যাখ্যা করাটা শরিআতে নিষেধ নয়; বরং সেটা সঠিক বিষয়। এটাই মূলত আল্লাহর সিফাতের ক্ষেত্রে সালাফদের কর্মনীতি।