একটি ফিতরাতি জবাব

একটি ফিতরাতি জবাব

আল্লাহ তাআলার সিফাতসমূহ অস্বীকার করার ক্ষেত্রে বিদআতিরা এমন কিছু আকলী যুক্তি পেশ করে থাকে, যা তারা তাদের ত্রুটিযুক্ত বিবেক-বুদ্ধির উপর নির্ভর করেই তৈরী করেছে। তারা বলে থাকে, আল্লাহর জন্য এ সিফাত সাব্যস্ত করা হলে এটি আবশ্যক হয়, ওটি আবশ্যক হয়…. ইত্যাদি।

এখানে ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চল বিজেতা সুলতান মাহমুদ ইবনু সুবক্তগিনের ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। আবু মাসউদ আল-বাজালি বলেন, সুলতানের দরবারে একবার আশাআরি আলিম আবু বকর ইবনু ফাওরাক প্রবেশ করলেন। সে সময় সুলতানের দরবারে একজন আহলুস সুন্নাহর আলিমও ছিলেন। তখন ইবনে ফাওরাককে আল্লাহ তাআলার উলু (সৃষ্টির উপর সমুন্নত হওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সেটা অস্বীকার করলেন। তিনি সুলতানকে যুক্তি দেখিয়ে বললেন, আপনি যদি আল্লাহর জন্য উপর সাব্যস্ত করেন, তাহলে তার জন্য নীচ সাব্যস্ত করাও আবশ্যক হয়। সুলতান “ইলমুল কালাম” এবং আকলি যুক্তি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তিনি তার কথার স্বভাব সুলভ সহজ-সরল জবাব প্রদান করতে গিয়ে বললেন, আমার উপর কিছুই আবশ্যক হয় না। কেননা আল্লাহ তাআলা সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি উপরে। এ ব্যাপারে আমি তাই বলবো, যা আল্লাহ তাআলা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে আমার উপর যদি আবশ্যক কিছু থাকে, তাহলে আল্লাহ তাআলার জন্যও উহা আবশ্যক হয়। কারণ তিনিই উহা বলেছেন। আল্লাহ তাআলার উপর কিছু আবশ্যক করার কেউ আছে কি? কেউ কি বলতে পারবে, হে আমার রব! তুমি তোমার নিজের জন্য উপর সাব্যস্ত করেছো, সুতরাং তোমার উপর তোমার সত্তার জন্য নীচ সাব্যস্ত করাও আবশ্যক? নাউযুবিল্লাহ। —সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৩/৩১৪

সুলতান মাহমুদ আশআরি আলিমকে যে ফিতরাতি জবাব দিয়েছেন আল্লাহর সিফাত নাকোচকারী বিদআতিদের সকল সন্দেহের সেটিই সঠিক জবাব। সুতরাং আমরা যখন বলবো, এটি হলো আল্লাহ তাআলার কথা ও তার রাসুলের কথা, তখন আমাদের এ কথার সামনে তাদের বিবেক-বুদ্ধির আবশ্যকীয় যুক্তিগুলো ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। যারা আল্লাহ ও তার রাসুল ﷺ-এর উপর কিছু আবশ্যক করতে চায়, তারা তা করুক। কিন্তু আমাদের উপর আল্লাহর কালাম ও রাসুল ﷺ-এর কালামের উপর ইমান আনয়ন করা ব্যতীত অন্য কিছুই আবশ্যক নয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *