এ দুনিয়ার জীবনই শেষ গন্তব্য নয়

এ দুনিয়ার জীবনই শেষ গন্তব্য নয়

বর্তমানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অধিকাংশ মানুষের চিন্তা- চেতনা, কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও কাজকর্ম দেখে মনে হতে পারে এ পৃথিবীটাই বুঝি শেষ ঠিকানা, এরপরে আর কোনো জগত নেই। কিন্তু এটা আল্লাহ তাআলার বাণীর সম্পূর্ণ বিপরীত; শয়তানের একটি কুমন্ত্রণা ও সুবিধা ভোগী কিছু মানুষের অলীক কল্পনা মাত্র!

বর্তমানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অধিকাংশ মানুষের চিন্তা- চেতনা, কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও কাজকর্ম দেখে মনে হতে পারে এ পৃথিবীটাই বুঝি শেষ ঠিকানা, এরপরে আর কোনো জগত নেই। কিন্তু এটা আল্লাহ তাআলার বাণীর সম্পূর্ণ বিপরীত; শয়তানের একটি কুমন্ত্রণা ও সুবিধা ভোগী কিছু মানুষের অলীক কল্পনা মাত্র!

সৎকাজে ক্লান্ত হলে চলবে না; সম্মুখে অপেক্ষা করছে চোখ জুড়ানো নিআমত ও সৌন্দর্যসমূহ— “কেউই জানে না (জান্নাতে)তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কি লুকিয়ে রাখা হয়েছে তাদের উত্তম কৃতকর্মের পুরস্কার স্বরূপ।” ৩২/১৭

রাসুল ﷺ দুনিয়ার জীবনকে পরকালের শস্যক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অর্থাৎ আমরা এখানে যে শস্য লাগাবো, যেভাবে পরিচর্যা করব তার উপরই নির্ভর করবে পরকালের ফসল। তেঁতুল গাছ লাগিয়ে সুমিষ্ট আম ফল আশা করা যাবে না।

বণিকের সদাই নেওয়ার বাণিজ্য কেন্দ্র হলো এই পৃথিবী। আমরা সকলে বণিক। জেনে বুঝে উত্তম সদাই সংগ্রহ করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

দুনিয়াটি হলো পরীক্ষার কক্ষ। আর আমরা সকলে পরীক্ষার্থী। সময়ের অপচয় না করে প্রশ্নপত্র ঠিকমত পড়ে অনুধাবন করে থিওরি ও প্র্যাকটিক্যাল বিষয়গুলোর সঠিক জবাবদানে তৎপর থাকাই হবে আমাদের প্রকৃত লক্ষ্য। সাদা খাতা জমা দিলে কিংবা ভুলভাল লিখলে পাশ নম্বর পাওয়া যাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেছেন, (অনুবাদ) “দুনিয়ার জীবন যেন তোমাদেরকে মোহগ্রস্ত করে না ফেলে।” “তোমরা পরস্পর সৎকর্ম, ধৈর্য ও আল্লাহ সচেতনতায় তথা জেনে বুঝে আল্লাহর হুকুম পালনে প্রতিযোগিতা করো।”

রাসুল ﷺ আরো বলেছেন, (অনুবাদ) “পৃথিবীতে এমন ভাবে চলো যেন তুমি একজন মুসাফির।” বেড়াতে এসে বাড়ি ফেরার কথা ভুলে গেলে চলবে কি?

মিথ্যা অহমিকা, ক্ষমতার বড়াই,সন্তান-সন্ততি, রাশি রাশি স্বর্ণরৌপ্য, ধন সম্পদের মোহে আমরা যেন গন্তব্য ভুলে না যাই।

মোটা দাগে মানব জীবনের ধাপগুলো নিম্নরূপ—

• রুহের জগত- আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে তিনটি ওয়াদা নিয়ে আমরা দুনিয়ার এ জগতে এসেছি। তা হলো আল্লাহ তাআলাকে রব হিসেবে মান্য করব, অন্ধ অনুসরণ পরিহার করব এবং আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবের অনুসরণ করে ন্যায় অন্যায় মেনে চলব।

• দুনিয়ার জগত- বর্তমানে এ জগতে অবস্থান করছি। দুনিয়ার জীবনটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষাগার কিংবা শস্যক্ষেত্র স্বরূপ। তবে জীবনকাল খুবই সংক্ষিপ্ত। তাই সময়ের ন্যায়সঙ্গত ও সদ্ব্যবহার করতে হবে।

• আলমে বারযাখ— মৃত্যু থেকে কিয়ামত পূর্ব অবস্থানকাল।

• কিয়ামত ও হাশর বা ফলাফল প্রকাশের সময়কাল।

• পরিশেষে— সর্বশেষ গন্তব্য চিরসুখের জান্নাত কিংবা চিরস্থায়ী জাহান্নামের আগুন।

পরীক্ষার সুযোগ একবারই পাওয়া যাবে। প্রশ্নপত্র ওপেন করে দেওয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরায় পরীক্ষার্থীর সকল কর্মকান্ড রেকর্ড রাখা হচ্ছে। সেদিন হাত-পা, চোখ, মুখ আমাদের সমস্ত কর্মের সাক্ষ্য দেবে।

চোখ বন্ধ করে ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখি— আজ না হয় কাল, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়, ভালো লাগুক চাই না লাগুক, সকল মোহ ত্যাগ করে, ধনসম্পদ -ক্ষমতার দম্ভ ফেলে একাকী শূন্য হাতে মৃত্যুবরণ করতেই হবে। সেখান থেকে কেউ কোনদিন ফিরে আসবেনা।

একটি আকুল আবেদন— আসুন আল্লাহ তাআলার গাইডলাইনটি দ্রুত জেনে নেই। ভুল পথে গিয়ে নিজের সর্বনাশ ডেকে না আনি। তাওবা করে এখনই ফিরে আসি।

আবদুল্লাহ আল মামুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *